আমার রামজন্ম
তৈমুর খান
রসুলপুর আসিয়াছি
আকাশ মেঘে মুখ ঢাকিয়াছে
নবনীতাকে আমি কোনোদিন দেখি নাই
উহার নাম শুনিয়াছি
এখানে যাহাকেই দেখিতেছি
নবনীতা বলিয়া বোধ হইতেছে
চেঁচাইয়া ডাকিবার ইচ্ছা জাগিতেছে
আমি কী উদ্দেশ্যে এখানে আসিয়াছি
তাহা সম্পূর্ণ বিস্মৃত হইয়াছি
এখন বৃষ্টি হইলে জলকপোতের মতো ভিজিতে হইবে
ওপারে কি চাঁদিয়ালের মাঠ?
ঝুড়ি ঝুড়ি আলো নামিতেছে
দু'একটি চাঁদিয়াল উড়িতেছে
আমি রসুলপুর কেন আসিয়াছি
নবনীতা কে হয় আমার
এখন কোথায় যাইব
কিছুই ভাবিতে পারিতেছি না
কেবল মনে হইতেছে আমার সীতাকে রাবণ হরণ করিয়া লইয়াছে।
ব্রাত্য
তৈমুর খান
আমি কাহারও পছন্দের পাত্র হইলাম না
আমি স্রোতে ভাসিয়া আসিয়া
কিনারায় লাগিয়াছি
আমাকে কেহ অনুগ্রহ করিল না
কোনো কোনো ধনীর ভিতর কাঙাল বসবাস করে
কোনো কোনো কাঙালের ভিতর ধনীকেও থাকিতে দেখিয়াছি
সকলে একে একে পার হইয়া চলিয়া গেল
কেহই তেমন উৎসাহ দেখাইল না
আমি দুঃখের সমুদ্রে পড়িয়া আপন মনে কাঁদিলাম
কিন্তু কাহাকেও শুনাইলাম না
একটা প্রবল ঝড় আসিয়া
আমাকে পুনরায় যুগস্রোতে ঠেলিয়া দিল
আমি হাত-পা আছড়াইতে আছড়াইতে চলিতে লাগিলাম
কেহ আমাকে চিনিল না
কেহ আমাকে থামাইল না
সবারই বড়ো তাড়া রহিয়াছে
গৃহে উৎসব
বহু লোকজন আসিয়াছে
দ্রুত যাইতে হইবে
আমার দিকে চাহিবার কারও সময় হইল না।
(বীরভূম)