সেই ছেলেটা
স্বপন কুমার নাগ
স্বপন কুমার নাগ
সেই ছেলেটা থাকে ফুটপাতে, হবে বছর দশেক;
দুই চোখে তার রঙিন স্বপ্ন হতে চায় দশে এক।
দুই চোখে তার রঙিন স্বপ্ন হতে চায় দশে এক।
জন্মের পরে বাবা পরপারে, জ্ঞানের সাথে সে জানে;
মায়ের কুড়ানো কাচ কাগজেতে, মেটে তার ক্ষুধা মানে।
আধপেটা খেয়ে মায়ের স্বপ্ন, ছেলে বড়ো হবে যেদিন –
ঘুচবে যে তার শত শোক ব্যথা, এক লহমায় সেদিন।
ঘুচবে যে তার শত শোক ব্যথা, এক লহমায় সেদিন।
তাই একদিন সব দ্বিধা ঝেড়ে, স্কুলে যায় ওই ছেলে;
তবু একবেলা জোটেতো অন্ন, সব ব্যথা দূরে ঠেলে!
তবু একবেলা জোটেতো অন্ন, সব ব্যথা দূরে ঠেলে!
পড়াশোনা সাথে ছবিও সে আঁকে, বালির ওপর ঝুঁকে;
কুড়নো কাগজ যতটুকু ভালো, যত্নে রাখে সে বুকে।
কুড়নো কাগজ যতটুকু ভালো, যত্নে রাখে সে বুকে।
বাবুর বাড়ির চেয়ে আনা লেডে, কাগজেই আঁকিবুকি;
শত বাধা শত বিদ্রুপ ভুলে, নিয়েছে জীবনে ঝুঁকি।
শত বাধা শত বিদ্রুপ ভুলে, নিয়েছে জীবনে ঝুঁকি।
প্রতিযোগিতায় পাড়ার ক্লাবে, কিংবা গ্রামের অদূরে;
হয়না কখনো দ্বিতীয় যে সে, ভাবনা অনেক সুদূরে।
হয়না কখনো দ্বিতীয় যে সে, ভাবনা অনেক সুদূরে।
হঠাৎ সেদিন গুণীজন এক, দাঁড়ালো সম্মুখে হেসে;
অনাদরের এই প্রতিভাকে বুকে, টেনে নিলো ভালোবেসে।
অনাদরের এই প্রতিভাকে বুকে, টেনে নিলো ভালোবেসে।
পড়াশোনা আর ছবি আঁকা তার, ধ্যান-জ্ঞান সেই থেকে;
পূর্ণ করলো সেই মহাজন, না পাওয়াগুলোকে ঢেকে!
পূর্ণ করলো সেই মহাজন, না পাওয়াগুলোকে ঢেকে!
মায়ের খুশি, ছেলের স্বপ্ন, হলো মিশে একাকার;
সেই ছেলে হলো নয়নের মণি, একদিন দুনিয়ার!
সেই ছেলে হলো নয়নের মণি, একদিন দুনিয়ার!
এখনো অনেক মানুষ যে আছে, অন্যের দুখে দুঃখী;
আত্মত্যাগের বোঝা কাঁধে নিয়ে, অন্যের সুখে সুখী!
আত্মত্যাগের বোঝা কাঁধে নিয়ে, অন্যের সুখে সুখী!
তাইতো জগৎ এখনো সচল, রয়েছে আলোকময়;
স্বার্থহীনের ত্যাগের মন্ত্রে দীপ্ত, মহিমাময়!
স্বার্থহীনের ত্যাগের মন্ত্রে দীপ্ত, মহিমাময়!
বাস্তব সংখ্যা ও জীবনবো
স্বপন কুমার নাগ
বাস্তব মানেই মূলদ সংখ্যা এবং অমূলদ;
গণিতের এই ভাবধারাতে যত্তসব আপদ।
মূলদ হলো পূর্ণ সংখ্যা, সঙ্গে ভগ্নাংশ;
জীবন যেমন পূর্ণে-অংশে ধরিত্রীর অক্ষাংশ।
জীবন যেমন পূর্ণে-অংশে ধরিত্রীর অক্ষাংশ।
ধনাত্মক আর ঋণাত্মক-ও সংখ্যা যে ওই
পূর্ণে;
জীবনটাতো এমনই হয় সুখ-দুঃখ মননে।
জীবনটাতো এমনই হয় সুখ-দুঃখ মননে।
পূর্ণ সংখ্যায় শূন্য নিজেই মিলিয়েছে
হাত;
যেমন জীবন শূন্য-পূর্ণে রয় যে, মোদের সাথ।
যেমন জীবন শূন্য-পূর্ণে রয় যে, মোদের সাথ।
ভগ্নাংশের দু'টি রূপ সামান্য ও দশমিক;
চাওয়া-পাওয়ার হিসেবটা যে, নয় তারও অধিক।
চাওয়া-পাওয়ার হিসেবটা যে, নয় তারও অধিক।
আরও দু'টি স্বরূপ যে তার, প্রকৃত ও অপ্রকৃত;
মানুষ খোঁজে, মানুষ যে জন সৎ ও অসৎ।
মানুষ খোঁজে, মানুষ যে জন সৎ ও অসৎ।
সসীম ও আবৃত্ত হয়, ভগ্নাংশ দশমিকে;
জীবনও তার গোলক-ধাঁধায়, ঘুরছে চারিদিকে।
জীবনও তার গোলক-ধাঁধায়, ঘুরছে চারিদিকে।
সসীম জানে শুদ্ধ এবং মিশ্রতারই ফল;
জীবনকাল খুঁজে চলা, অনন্ত অতল।
জীবনকাল খুঁজে চলা, অনন্ত অতল।
আবৃত্তেরও দু'টি ধারা মিশ্র এবং শুদ্ধ;
জীবনটা ওই গণিতবোধে রয়েছে বিমুগ্ধ!
জীবনটা ওই গণিতবোধে রয়েছে বিমুগ্ধ!
বাস্তবেরই কল্পলোকে, আমরা ঘুরি সচল;
জীবন মোদের গণিত ছাড়া একটি পা-ও অচল!
জীবন মোদের গণিত ছাড়া একটি পা-ও অচল!
(হলদিয়া, পূর্ব মেদিনীপুর)