ঝরাপাতা
স্নিগ্ধা ব্যানার্জী
একটা ঝোড়ো হাওয়া কিছু
শুকনো পাতা
পায়ের কাছে এনে ফেললো,
একটা সিরসির আওয়াজে বুকের ভেতরটা
মুচড়ে উঠল।
মনে পড়ে গেল এই শুকনো পাতার
বনভোজন।
ভাঙ্গা ইঁটের ট্যারাব্যাকা উনুন,
কাঁচা ডাল দিয়ে আগুন জ্বালানোর কি নিদারুণ চেষ্টা,
তারপর ঠান্ডা জলে ফোটা আধশেদ্ধ
খিচুড়ি,
কয়েকটা অনাবিল সরল
মূহূর্তের ফ্রেমে ধরা থাকে –
মার ভাঁড়ার থেকে চুরি করা চালডাল,
বাজারের ঝুড়ি থেকে
নেয়া সবজি
ঠাকুমার বয়ান থেকে
নেওয়া চুরি করা আমের
আচার ...
সেই নিস্পাপ ছেলেবেলা, সেই অদ্ভুত স্বাদ মেশানো খাবার,,
ধরা পড়ার ভয়ে কি
অনায়াসে অথচ কি আনন্দে
খেয়ে ফেলা সেই আধসেদ্ধ
জিনিষটিকে ...।
এক অজানা শীতকাল বয়ে আনত আরও কত কিছু
সন্ধেবেলায় পুলিপিঠে র
আসর বসত
সকালে রমজান চাচা বয়ে আনত জিরেন কাঠের রস,
সারারাত হাঁড়ি ঝুলত খেজুর গাছে।
বাগান ভরে উঠত গোলাপে
গাঁদাফুলে,
মৌমাছিরা সারাদিন গুনগুন করত।
সময়ের পদধ্বনিতে পিষ্ট
ছোটোবেলাটা
কোথায় যে হারিয়ে গেল!
এখন শীত শুধু উদাসীনতাই বয়ে আনে!