অসহায় জীবের
প্রতি
অজয় হালদার
কথায় আছে মাঘের শীত
বেশ ভয়ানক...
তারই প্রত্যক্ষ প্রমাণ
মিলছে প্রতি পদক্ষেপে।
চতুর্দিকে ঘন কুয়াশার
চাদরে আচ্ছন্ন পরিবেশ,
উত্তর দিক থেকে ঠান্ডা
বাতাস প্রবল বেগে প্রবাহিত হচ্ছে,
বাতাসে মিশছে কুয়াশার
জলবিন্দু –
গাছ পাতা থেকে সেই জল
টপ টপ করে পড়ছে মাটিতে
আর রাস্তাকে মনে হয়
বর্ষাকালে হওয়া গুড়ি বৃষ্টি।
প্রবল ঠান্ডার প্রকোপে
জঙ্গলের পশু পাখিরাও দিশাহারা।
এমনকি প্রচন্ড
ঠান্ডায় সারমেয়রা স্থান পেয়েছে
কোন গাড়ির নিচে বা
কোন ভাঙ্গা বাড়িতে।
এমন অবস্থায় কোথাও
কোন জনমানব নেই
ছবিটি যেন অতি বিরল
বসতিপূর্ণ এলাকা বিরাজমান।
এই ঠান্ডায় যে যার মত
নিজেদের বন্দী করে রেখেছে ঘরে
ঠিক জেলখানার
কয়েদীদের মত।
আর দেহ কুঞ্চিত আর
ভূকম্পনের ন্যায় কাঁপুনি
ভয়ে নয়-প্রবল শীতে।
নিজ গৃহ শীতবস্ত্র এমন
কি ঘর গরম রাখার যন্ত্র
যা মানুষকে পরিসেবা
দিলেও শীতল বাতাস
কড়া নাড়িয়ে দিয়ে
যায় প্রতিটি ঘরের দরজায়।
অথচ সমাজে এমন কিছু
মানুষ আছে
যাদের বাসস্থান রাস্তা
কিংবা কোন গাছের নিচে
এমনকি কোন ভঙ্গুর
ওভারব্রিজের তলদেশে।
তাদের দেহেও শীত লাগে
তারাও শীত কষ্ট অনুভব করে
কিন্তু বুক ফাটে তাদের
মুখ ফুটে ওঠে না
বুকে পাথর চাপা দিয়ে
লড়াই করে যাই প্রকৃতির সাথে।
তাদের এই বস্ত্রহীন
গৃহহীন অবস্থা দেখে
আমাদের মনে হয় ওরা কত
অসহায়
সহানুভূতিশীল লেখকও
তুলে ধরেন তাঁর লেখায়।
সত্যি কথা বলতে আমাদের
অনুভূতি বাঁচে কাগজের পাতায়
আর অসহায় মানুষগুলো
মরে জ্বলন্ত বাস্তবতায়।
কেউবা আবার দেবদূত
হয়ে অন্ন বস্ত্র বাসস্থান দান করে।
এই প্রবল ঠান্ডার হাত
থেকে নিজেদের বাঁচালেও
রাস্তার দুর্দশাগ্রস্ত
অসহায় দরিদ্র মানুষের প্রতি বিরূপতায় আমরা আজও মৃত।
আমাদের সকলের কর্তব্য
ওই অসহায় প্রাণী ও মানুষদের পাশে দাঁড়ানো।